খুব ইচ্ছা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। সু্যোগ ও হয়ে গেল। কিন্তু পরিবার কিছুতেই সমর্থন করলোনা। আমার থাকা খাওয়ার টাকা পরিবার থেকে কেও দিতে পারবেনা বলে সাফ জানিয়ে দিল। দিবেই বা কিভাবে! আমার পরিবারের কর্তার আশা যেন বছরের প্রতিটা মাস-ই ২৮ দিনে হয়। আমার বাবা বছরের কোন মাস ৩১ এর বদলে ২৮-২৯ এ গেলে একটু হাফ ছেড়ে বাঁচে, সেই পরিবারে পক্ষে প্রতি মাসে আমার পিছে ৪-৫ হাজার টাকা গচ্চা দেয়ার কোনই ইচ্ছা ছিলনা। কিন্তু আমার জেদ একবার যেদিকে চাপবে সেটা আমি নিজেও বদলাতে পারিনা।
আগামাথা না ভেবেই ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম। এক বন্ধুর সাহায্যে একটা টিউশনি ও পেয়ে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে যা পেতাম তাতে আমার ভালই চলতো। তাইতো রাগ করে প্রায় ৮-৯ মাস পরিবারের সাথে যোগাযোগ ই করিনি।
.
আমার ভালই চলছিলো দিনকাল। টিউশনির মাসিক বেতন জমিয়ে একটা সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইলও কিনে ফেললাম।
তখন মোবাইল খুব একটা দেখা যেতনা। যাঁদের ফ্যামিলি মেম্বার কেও বিদেশ থাকতো বা বড় ধরনের ব্যাবসা সংক্রান্ত কাজে খুব প্রয়োজন ছিল তাদের হাতেই মোবাইল দেখা মিলতো। কিন্তু বাসাবাড়িতে প্রচুর ল্যান্ডফোন দেখা যেত।
গ্রামাঞ্চলে যদি কারো একটা মোবাইল থাকতো, তো পাশের গ্রাম থেকেও ফোন আসতো।
.
এক সন্ধ্যায় ফোন চার্জে রেখে পড়ছি, এমন সময় একটা নাম্বার থেকে মিসকল আসলো।
এত সুক্ষ্মভাবে মিস কল দিচ্ছে, যা আমি মোবাইল হাতে রেখে শত চেষ্টা করেও রিসিভ করতে পারলাম না। যেন ওপাশের মানুষটি মিসকলে পি এইচ ডি।
পরে ৬-৭ টাকা মিনিটের এত দামি কল ব্যাক করতে বাধ্য হলাম। ভাবলাম বেয়াদপ টাকে উত্তমমধ্যম দিব।
ওপাশ থেকে খুব ঢঙ্গি গলার মেয়ে কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম। সেদিন কি ভেবেছিলাম জানিনা, তবে মেয়েদের প্রতি যে পুরুষদের জন্মগত দূর্বলতা তা আমার প্রকাশ পেতে ১০ সেকেন্ডও সময় নিলোনা।
.
প্রত্যেকদিন কথা হতো ওই অপরিচিত নাম্বারে। ৫০ টাকার রিচার্জ কার্ড বেডের নিচে গাদা হয়ে গেল। প্যান্টের পকেটে সবসময় দু'চারটে কার্ড জমা পড়ে থাকতে লাগলো।
একসময় বন্ধুত্ব থেকে শুরু হলো এক রুপকথার প্রেমের সম্পর্ক। ওই একমাস আমার খুব কষ্টেই কাটাতে হলো, মেস ফি বাকি পড়লো।
সব ই ওই মেয়েটার জন্য।
তবুও সে এক মিনিট ফোন করতো না। শুধু মিসকল দিতো। চাইনারা মোবাইল আবিষ্কার করলেও মিসকল আবিষ্কার করেছিল আমাদের দেশের তখনকার মেয়েরা।
ওর ফোন বেশির ভাগ সময় ব্যাস্ত থাকতো। ফোন দিয়ে লাইন পেতেও আমাকে যথেষ্ট বেগ পেতে হতো, যেন আমি টিভিতে ফ্রি কুইজ প্রতিযোগিতায় ফোন করছি।
.
আমাদের ডেট ফিক্সড হলো, দেখা করার জন্য। আসার দিন সে খোঁজখবর নিলো কত টাকা নিয়ে আসছি।
মাস শেষ ৬ টা ৫০০ টাকার নোট, পকেট গরম। যদি জানতাম কিছুক্ষণ পরেই পকেট ঠান্ডা হয়ে যাবে, আমার কাছে রিক্সা ভাড়াও থাকবেনা, তাইলে কি আমি ইচ্ছা করে পায়ে হেটে এমন বাশ খেতে যেতাম!!
.
দেখা করার জন্য আমকে মেয়েটা একটা ভি আইপি রেস্টুরেন্টের ঠিকানা দিল। পৌঁছেও গেলাম।
৬ টা মেয়ে দেখতে পেলাম, চিনলাম না কোনটা আমার জিনিস। ওরা আমাকে মিসকল মেরে পরিক্ষা করলো, আমাকে বসতেও বললোনা। দেখলাম নিজেদের ভিতর ঘুটুরঘুটুর করছে।
কিছুক্ষন পর জানতে পারলাম ওই ৪ নম্বর, দলনেতা টাইপের মেয়েটাই নাকি আমার মাল।
ক্ষুধার্ত বাঘিনীর মত একটা চেয়ে থাকলো আমার দিকে।
ওরা আবদার শুরু করলো, অনেক কিছু খাওয়ার। বললাম অর্ডার করে দাও।
আমার পার্মিশন পেয়ে যেন ওদের মনে হলো কোটি টাকার লটারি জিতেছে।
ইচ্ছামত খাচ্ছে হায়েনার দলের মত। কেও কেও আমার দিকে তাকিয়ে এমন ভাব করছিল যেন ওদের আরো দ্বিগুণ খাবার চাই। নিজেকে মনে হচ্ছিলো আমি একটা সামান্য খরগোশ হয়ে ভুলে বাঘের ডেরাই ঢুকে পড়ছি।
ওয়েটার কে জিজ্ঞাসা করলাম বিল কতো হলো?
বললো ৩ হাজার ৫০ টাকা। বাকি ৫০ টাকা কিভাবে ম্যানেজ করবো ভাবতেই কুল কুল করে ঘেমে উঠলাম।।
ওদের দেখে আমার সামান্য পরিমান বুঝতে কষ্ট হলোনা, ওরা এভাবেই ছেলেদের পটিয়ে পিছনে বাশ দিয়ে হাতি হ্যারিকেন ধরিয়ে দেই।
পকেটের শক্ত ৬ টা নোটের দিকে তাকিয়ে খুব মায়া হলো। একবার নোটের দিকে তাকাচ্ছি, তো আরেকবার শীকাররত বাঘিনীদের দিকে।
ভাবলাম কিছু একটা করতে হবেই, হাতে বেশি সময় নাই। নইলে এরা আমার গায়ে লবন ছিটিয়ে আমাকেও সাবাড় করে দিবে। দেখলাম ওরা খাওয়াই ব্যাস্ত, এই সু্যোগে রেস্টুরেন্টের গেট দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ম্যানেজার জিজ্ঞেস করলো কোথাই যাচ্ছেন?
বললাম ম্যাডামের জন্য মোবাইল রিচার্জ কার্ড লাগবে তাই আনতে যাচ্ছি।
বলেই রিক্সা করে ফুটলাম। পরে ওখানে কি হয়েছিল জানিনা।
সারাদিন ফোন অফ ছিল। সন্ধ্যায় অন করে দেখলাম অশ্রাব্য ভাষায় টেক্সট করা হয়েছে আমাকে, যার থেকে আমার মা বাবাও রেহাই পাইনি।
কি লিখা ছিল টেক্সট-এ, তা না হয় আরেকদিন জানাবো!!!
.
[সত্য ঘটানা অবলম্বনে]
আগামাথা না ভেবেই ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম। এক বন্ধুর সাহায্যে একটা টিউশনি ও পেয়ে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে যা পেতাম তাতে আমার ভালই চলতো। তাইতো রাগ করে প্রায় ৮-৯ মাস পরিবারের সাথে যোগাযোগ ই করিনি।
.
আমার ভালই চলছিলো দিনকাল। টিউশনির মাসিক বেতন জমিয়ে একটা সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইলও কিনে ফেললাম।
তখন মোবাইল খুব একটা দেখা যেতনা। যাঁদের ফ্যামিলি মেম্বার কেও বিদেশ থাকতো বা বড় ধরনের ব্যাবসা সংক্রান্ত কাজে খুব প্রয়োজন ছিল তাদের হাতেই মোবাইল দেখা মিলতো। কিন্তু বাসাবাড়িতে প্রচুর ল্যান্ডফোন দেখা যেত।
গ্রামাঞ্চলে যদি কারো একটা মোবাইল থাকতো, তো পাশের গ্রাম থেকেও ফোন আসতো।
.
এক সন্ধ্যায় ফোন চার্জে রেখে পড়ছি, এমন সময় একটা নাম্বার থেকে মিসকল আসলো।
এত সুক্ষ্মভাবে মিস কল দিচ্ছে, যা আমি মোবাইল হাতে রেখে শত চেষ্টা করেও রিসিভ করতে পারলাম না। যেন ওপাশের মানুষটি মিসকলে পি এইচ ডি।
পরে ৬-৭ টাকা মিনিটের এত দামি কল ব্যাক করতে বাধ্য হলাম। ভাবলাম বেয়াদপ টাকে উত্তমমধ্যম দিব।
ওপাশ থেকে খুব ঢঙ্গি গলার মেয়ে কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম। সেদিন কি ভেবেছিলাম জানিনা, তবে মেয়েদের প্রতি যে পুরুষদের জন্মগত দূর্বলতা তা আমার প্রকাশ পেতে ১০ সেকেন্ডও সময় নিলোনা।
.
প্রত্যেকদিন কথা হতো ওই অপরিচিত নাম্বারে। ৫০ টাকার রিচার্জ কার্ড বেডের নিচে গাদা হয়ে গেল। প্যান্টের পকেটে সবসময় দু'চারটে কার্ড জমা পড়ে থাকতে লাগলো।
একসময় বন্ধুত্ব থেকে শুরু হলো এক রুপকথার প্রেমের সম্পর্ক। ওই একমাস আমার খুব কষ্টেই কাটাতে হলো, মেস ফি বাকি পড়লো।
সব ই ওই মেয়েটার জন্য।
তবুও সে এক মিনিট ফোন করতো না। শুধু মিসকল দিতো। চাইনারা মোবাইল আবিষ্কার করলেও মিসকল আবিষ্কার করেছিল আমাদের দেশের তখনকার মেয়েরা।
ওর ফোন বেশির ভাগ সময় ব্যাস্ত থাকতো। ফোন দিয়ে লাইন পেতেও আমাকে যথেষ্ট বেগ পেতে হতো, যেন আমি টিভিতে ফ্রি কুইজ প্রতিযোগিতায় ফোন করছি।
.
আমাদের ডেট ফিক্সড হলো, দেখা করার জন্য। আসার দিন সে খোঁজখবর নিলো কত টাকা নিয়ে আসছি।
মাস শেষ ৬ টা ৫০০ টাকার নোট, পকেট গরম। যদি জানতাম কিছুক্ষণ পরেই পকেট ঠান্ডা হয়ে যাবে, আমার কাছে রিক্সা ভাড়াও থাকবেনা, তাইলে কি আমি ইচ্ছা করে পায়ে হেটে এমন বাশ খেতে যেতাম!!
.
দেখা করার জন্য আমকে মেয়েটা একটা ভি আইপি রেস্টুরেন্টের ঠিকানা দিল। পৌঁছেও গেলাম।
৬ টা মেয়ে দেখতে পেলাম, চিনলাম না কোনটা আমার জিনিস। ওরা আমাকে মিসকল মেরে পরিক্ষা করলো, আমাকে বসতেও বললোনা। দেখলাম নিজেদের ভিতর ঘুটুরঘুটুর করছে।
কিছুক্ষন পর জানতে পারলাম ওই ৪ নম্বর, দলনেতা টাইপের মেয়েটাই নাকি আমার মাল।
ক্ষুধার্ত বাঘিনীর মত একটা চেয়ে থাকলো আমার দিকে।
ওরা আবদার শুরু করলো, অনেক কিছু খাওয়ার। বললাম অর্ডার করে দাও।
আমার পার্মিশন পেয়ে যেন ওদের মনে হলো কোটি টাকার লটারি জিতেছে।
ইচ্ছামত খাচ্ছে হায়েনার দলের মত। কেও কেও আমার দিকে তাকিয়ে এমন ভাব করছিল যেন ওদের আরো দ্বিগুণ খাবার চাই। নিজেকে মনে হচ্ছিলো আমি একটা সামান্য খরগোশ হয়ে ভুলে বাঘের ডেরাই ঢুকে পড়ছি।
ওয়েটার কে জিজ্ঞাসা করলাম বিল কতো হলো?
বললো ৩ হাজার ৫০ টাকা। বাকি ৫০ টাকা কিভাবে ম্যানেজ করবো ভাবতেই কুল কুল করে ঘেমে উঠলাম।।
ওদের দেখে আমার সামান্য পরিমান বুঝতে কষ্ট হলোনা, ওরা এভাবেই ছেলেদের পটিয়ে পিছনে বাশ দিয়ে হাতি হ্যারিকেন ধরিয়ে দেই।
পকেটের শক্ত ৬ টা নোটের দিকে তাকিয়ে খুব মায়া হলো। একবার নোটের দিকে তাকাচ্ছি, তো আরেকবার শীকাররত বাঘিনীদের দিকে।
ভাবলাম কিছু একটা করতে হবেই, হাতে বেশি সময় নাই। নইলে এরা আমার গায়ে লবন ছিটিয়ে আমাকেও সাবাড় করে দিবে। দেখলাম ওরা খাওয়াই ব্যাস্ত, এই সু্যোগে রেস্টুরেন্টের গেট দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ম্যানেজার জিজ্ঞেস করলো কোথাই যাচ্ছেন?
বললাম ম্যাডামের জন্য মোবাইল রিচার্জ কার্ড লাগবে তাই আনতে যাচ্ছি।
বলেই রিক্সা করে ফুটলাম। পরে ওখানে কি হয়েছিল জানিনা।
সারাদিন ফোন অফ ছিল। সন্ধ্যায় অন করে দেখলাম অশ্রাব্য ভাষায় টেক্সট করা হয়েছে আমাকে, যার থেকে আমার মা বাবাও রেহাই পাইনি।
কি লিখা ছিল টেক্সট-এ, তা না হয় আরেকদিন জানাবো!!!
.
[সত্য ঘটানা অবলম্বনে]
No comments:
Post a Comment